Deep Fake ভিডিও ভবিষ্যতের জন্য কতটা ভয়ানক হতে চলেছে ?

 

এটা নিয়ে আজও ভাবছিলাম!

ডিপফেইক প্রযুক্তি দিনদিন এত এত উন্নত হচ্ছে যে অদূর ভবিষ্যতে এর ত্রুটি ধরতে পারা খুবই কঠিন হয়ে যাবে। যদিও এটা শনাক্ত করার অ্যালগোরিদমও ডেভেলপ করা হচ্ছে তবে সাধারণ মানুষ এর জন্য হঠাৎ করে খালি চোখে এটা বোঝা প্রায় অসম্ভব হয়ে যাবে।

পৃথিবীতে প্রচুর মানুষ আছেন যারা বাছবিচার ছাড়া অনলাইনে যা দেখেন তাই বিশ্বাস করেন বা ফ্যাক্ট হিসেবে ধরে নেন। এর অন্যতম কারণ প্রকৃত শিক্ষার অভাব এবং ইন্টারনেট ও নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে অজ্ঞতা। এটা বিশেষ করে উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশে বেশি দেখা যায়। তাঁরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে ধর্মভীরুও হয়ে থাকে।

সাধারণ মানুষকে প্রভাবিত করাঃ

এখন কোনো এক বদ লোক যদি এমন একটা ডিপফেইক ভিডিও তৈরি করে যেখানে দেশ/ধর্ম/জাতিকে অপমান করার ঘটনা দেখানো হচ্ছে, তাহলে এর পরের ফলাফল কী হবে তা আমরা বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশের লোকজন বেশ ভালোই জানি। এর চেয়ে অনেক তুচ্ছ কারণেও নানা মর্মান্তিক ঘটনা দেখার দুর্ভাগ্য আমাদের হয়েছে। ওই ভিডিওর চরিত্রগুলোর চেহারা কৃত্রিমভাবে জুড়ে দেয়া হয়েছে এটা তো সাধারণ লোকজন বুঝবে না। এভাবে স্বার্থান্বেষী লোকজন সাধারণ মানুষকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। এছাড়া নানা প্রোপ্যাগান্ডা ছড়াতে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের চেহারা নকল করে নানা বক্তৃতাও প্রকাশ করা হতে পারে।

ব্যক্তিগত মানহানিঃ

এই প্রযুক্তি কারও ব্যক্তিগত সম্মানহানি করার কাজে অহরহ ব্যবহার বলে শংকা করছি। বিশেষ করে নারীদের। নানা বাজে বা আপত্তিকর ভিডিওর সাথে অন্য ব্যক্তির চেহারা জুড়ে দিয়ে অনলাইনে প্রকাশ করা হলে সেটা ওই ব্যক্তি ও তাঁর পরিবারের জন্য একটা বিব্রতকর অবস্থা ডেকে আনবে। যদিও এক সময় জানা যাবে যে এটা ফেইক ছিল, কিন্তু এরপরেও একটা অযথা হয়রানি অযাচিত।

উপরে দুইটি ছোটো ভিডিও দিয়েছি দেখুন। দুইটি ক্ষেত্রেই আলাদা মানুষের চেহারা বদলে দিয়ে বারাক ওবামা ও ডোনাল্ড ট্রাম্প এর চেহারা বানানো হয়েছে। এবং এটা দেখে হঠাৎ কেউ বলবে না যে এগুলো নকল ভিডিও। কণ্ঠ নকল করার প্রযুক্তিও এখন আমাদের দোরগোড়ায়।

ডিপফেইক এর উন্নতির কারণে এই দুইটি সমস্যা সবচেয়ে বেশি প্রকট আকার ধারণ করবে বলে আমার মত। তবে জনতা আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে বুঝলে এবং যুক্তি দিয়ে চিন্তা করলে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা থেকেই রক্ষা পাওয়া সম্ভব। যারা প্রযুক্তি সম্পর্কে জানেন তাঁরা আশেপাশের মানুষকে চেষ্টা করবেন নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে একটা ধারণা দিতে, এটা দরকারি আমাদের সমাজের স্থিতিশীলতার জন্য। কিছু দেখলেই বা পড়লেই উত্তেজিত হবার অভ্যাস বাদ দিয়ে তা যাচাইবাছাই করার মানসিকতা গড়ে না ওঠা পর্যন্ত ডিপফেইক বা এমন আসন্ন প্রযুক্তিগুলো “একে তো নাচুনে বুড়ি, এর উপর ঢোলের বারি”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *